গাজায় নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গেল সপ্তাহে ত্রাণ আসার একমাত্র পথ রাফাহ সীমান্তের ফিলিস্তিন অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। এবার খবর বেরিয়েছে, রাফা সীমান্তে প্রতিনিধি পাঠাতে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিন দেশের কর্মকর্তাদের বরাতে এমন খবর ছেপেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইসরায়েলি সরকারের গোপন আঁতাতের অভিযোগ অনেক পুরোনো। গেল অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর সেই অভিযোগের পালে নতুন করে হাওয়া লেগেছে।
ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরেই চায়, গাজায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কর্তৃত্ব থাকুক। কিন্তু হামাসের কারণে তেলআবিবের সেই খায়েশ পূরণই হচ্ছে না।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গেল সপ্তাহে সোমবার রাফার সীমান্তের ফিলিস্তিনি অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর ওই সীমান্ত বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এমন অবস্থায় ইসরায়েল ও গাজার মধ্যবর্তী কেরেম শালোম ক্রসিং দিয়ে ত্রাণবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মিসর। কায়রোর দাবি, রাফা সীমান্ত থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সরে গেলেই তারা ট্রাক যেতে দেবে।
ইসরায়েলের সিনিয়র কর্মকর্তারা বলছেন, তারা রাফার নিয়ন্ত্রণ ফিলিস্তিনিদের কাছে ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে হামাসঘেঁষা কাউকে ইসরায়েল চায় না বলেও জানিয়েছেন তারা। গেল সপ্তাহেই ইসরায়েলি কর্মকর্তারা প্রস্তাব দেন যে, রাফা সীমান্ত পরিচালনায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করতে হবে। তবে ওই কর্মকর্তা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সদস্যের ভূমিকায় থাকতে পারবে না বলে শর্ত দেয় ইসরায়েল।
অ্যাক্সিওস জানিয়েছে, ইসরায়েলের এমন শর্তে তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও তার উপদেষ্টা। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে সাফ জানিয়েছে দিয়েছেন যে, ‘আন্ডারকভার’ হিসেবে রাফা সীমান্তে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। উল্টো ১০ দিন ধরে আটকে রাখা ফিলিস্তিনের রাজস্ব ছেড়ে দিতে ইসরায়েলে প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আব্বাস।
রাজস্বের ওই অর্থের ওপর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বাজেট নির্ভর করে। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পর আব্বাস সরকারকে চাপে রাখতে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে তেল আবিব। অবশ্য ওই বাজেটের অর্থ ছেড়ে দিলেও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ তাদের কর্মকর্তাদের রাফা সীমান্তে পাঠাবে না। কারণ তাদের আশঙ্কা কর্মকর্তাদের হত্যা করতে পারে হামাস।
আব্বাস সরকারও চায় রাফার নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে হস্তান্তর করা হোক। তবে সেটা তাদের পাশ কাটিয়ে ইসরায়েল ও মিসরের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে নয়। বরং তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করেই রাফার নিয়ন্ত্রণ চায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। তেমন কিছুর ব্যাপারে ইসরায়েলের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেলে রাফায় কর্মকর্তা পাঠাতে আপত্তি নেই আব্বাসের।
https://www.kalbela.com/world/middle-east/88117
2024-05-15 11:35:35