বিপজ্জনক এক খেলায় মেতে উঠেছে মালয়েশিয়া। পশ্চিমাদের রাগিয়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা বাড়াচ্ছে দেশটি। হংকংভিত্তিক সংবাদপত্র সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বলছে, সম্প্রতি কাতার সফরে গিয়ে হামাস নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। এতে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের চক্ষুশূল হয়ে শাস্তির মুখে পড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে বরাবরই নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার রেখেছে মালয়েশিয়া। কিন্তু পশ্চিমাদের কাছে সন্ত্রাসীর তকমা পাওয়া হামাসের সঙ্গে সখ্যতা বাড়ালে সেটা নিশ্চিতভাবেই পশ্চিমাদের ক্ষেপিয়ে তুলবে। আর এমন করাটা বোকামি হবে বলেও মনে করেন নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মালয়েশিয়া ফরেন পলিসি অ্যান্ড সিকিউরিটি এক্সপার্ট জুলিয়া রকনিফার্ড। পশ্চিমাদের সঙ্গে সরাসরি দ্বন্দ্বে না জড়িয়েই মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করা সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে কাতার যান অনোয়ার ইব্রাহিম। তখনই হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়া এবং গ্রুপটির সাবেক চেয়ারম্যান খালেদ মিশালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। মালয়েশিয়ার মাধ্যমে হামাস তহবিল সংগ্রহ করছে বলে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের। এ নিয়ে গেল সপ্তাহে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কুয়ালালাম ঘুরে গেছেন। এরপরই হামাসের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন আনোয়ার।
ইরান ও হামাসের প্রতি মালয়েশিয়া সরকারের উদার মনোভাব, কোনো ভালো ফল বয়ে আনেনি। মালয়েশিয়ার মাটিতে হামাসের কয়েকজনকে আততায়ী হামলায় নিহত হতে হয়েছে। তবে মালয়েশিয়ার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড এর চেয়েও খারাপ পরিণতি বয়ে আনতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অব ডেমোক্রেসিসের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাথন শাহানজার।
ইরানকে ড্রোন উৎপাদনে সহায়তা করছে এমন অভিযোগে গেল ডিসেম্বরে চারটি মালয়েশিয়ার কোম্পানির ওপর ইতোমধ্যেই খড়গ নেমে এসেছে। ওই কোম্পানিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়। সেই ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই আবারও বিপজ্জনক এক চাল দিয়ে বসল মালয়েশিয়া। হামাসের সঙ্গে এই দহরম-মহরম মালয়েশিয়াকে অজানা এক সীমানায় নিয়ে গেছে।
আনোয়ার নিজেও বুঝতে পেরেছেন হামাসের নেতাদের সঙ্গে তার এই সাক্ষাৎ মিত্র এবং সাধারণ মালয়েশীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তবে তার ভাষায় গাজা উপত্যকায় শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য এমন পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। জন্য কাতারের উদাহরণও টেনেছেন আনোয়ার। হামাসের সঙ্গে সুসম্পর্কের জেরে আরব উপসাগরীয় দেশটি মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিতে পেরেছে। আনোয়ারও মালয়েশিয়াকে এমন ভূমিকায় দেখতে চান।
https://www.kalbela.com/world/middle-east/88298
2024-05-16 02:56:35