মৃণালের জন্মবার্ষিকী (১৪ মে) উপলক্ষ্যে গত ১০ মে পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাগৃহ এবং ওটিটি প্লাটফর্ম হইচইতে মুক্তি পেয়েছে কিংবদন্তী নির্মাতা মৃণাল সেনকে নিয়ে নির্মিত অঞ্জন দত্তের ছবি ‘চালচিত্র এখন’। ছবিটি মুক্তির পর তুমুল প্রশংসা পাচ্ছে ভারত বাংলাদেশের দর্শকদের!
![](https://150593535.v2.pressablecdn.com/wp-content/uploads/2024/02/Channeliadds-googlenews.jpg)
১৯৮১-তে মৃণাল সেনের নির্দেশনায় বড় পর্দায় মুক্তি পেয়েছিল কালজয়ী ছবি ‘চালচিত্র’। সেই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন খোদ অঞ্জন দত্ত। রিয়েল লাইফে মৃণাল সেনের সঙ্গে তার সম্পর্কটাকেই দর্শকের সামনে তুলে ধরার এক অননন্য প্রয়াস অঞ্জন দত্তের ‘চালচিত্র এখন’।
![](https://150593535.v2.pressablecdn.com/wp-content/uploads/2024/02/Channeliadds-bkash-05.05.2024.jpg)
সাধারণ দর্শক থেকে সিনেমা সংশ্লিষ্ট মানুষেরা ‘চালচিত্র এখন’ এর প্রশংসা করছেন। সিনেবোদ্ধারা মনে করছেন, মৃণাল সেনকে এতো অঞ্জনের মতো এতো জীবন্তভাবে কেউ আর সিনেপর্দায় তুলে আনতে পারবেন কিনা সন্দেহ!
কেউ কেউ আবার এক পা সামনে বাড়িয়ে বলছে, এটা অঞ্জন পরিচালিত ও অভিনীত সেরা একটি ছবি! আরো একটু বাড়িয়ে কেউ আবার বলছেন, এটি বাংলা ভাষায় নির্মিত সেরা বায়োপিক! ছবিতে মৃণাল সেনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অঞ্জন দত্ত।
![](https://150593535.v2.pressablecdn.com/wp-content/uploads/2024/02/Channeliadds-Reneta-16-04-2024.gif)
পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত নির্মাতা কমলেশ্বর মুখার্জী ছবিটি দেখে লিখেছেন,“ছবিটায় মৃণাল-গুণকীর্তন নেই বা ছবিটা ন্যাকা ন্যাকা পারসোনাল নস্টালজিয়ায় ভেজেনি (যেটা কি না বাজারে ভালো খায়) – ছবিটা cruelly truthful – সেই কারণে এই ছবি শুধু independant পদ্ধতিতেই করা সম্ভব। না, কেউ আমাকে এ নিয়ে কিছু লিখতে বলেন নি – তবে ছবিটা দেখে না লিখেও পারলাম না। কৃতজ্ঞ রইলাম, অঞ্জনদা, নীল আর এসভিএফের কাছে। ছবিটা দেখবেন।”
আরেক গুণী নির্মাতা অতনু ঘোষ ছবিটি দেখে লিখেছেন,“অঞ্জন দত্ত পরিচালিত ‘চালচিত্র এখন’ বুদ্ধিদীপ্ত, মজার, আধুনিক সিনেমা। এ ছবি কোনও চিরাচরিত ফর্মের নিরাপদ আশ্রয় খোঁজে না। বিখ্যাত ব্যক্তির চরিত্র মানেই অবিকল মেকআপ, কথা বলার ভঙ্গী বা গলা নকল ইত্যাদি সংস্কারের ধার ধারেনা। তাই সময়ের নিখুঁত পুনর্নির্মাণ যেমন আছে, তার থেকে বেরিয়ে আসাও আছে! কিছু স্মৃতি, আদল, প্রভাব, সঙ্গতি, অসঙ্গতির সুত্রে দুটি মানুষের অসাধারণ সংযোগ, বন্ধুত্ব ও সৃষ্টির গল্প। যার আবেগ, দর্শন স্পর্শ করে, প্রেরণা যোগায়। মৃণাল সেনের চেনা ফর্ম, জাম্প কাট, ফ্রিজ ফ্রেম যেমন আছে, সঙ্গে আছে এমন কিছু প্রয়োগ যা একান্তই অঞ্জনদার নিজস্ব সিনেম্যাটিক স্টাইল। যেমন এক অনন্য উদযাপনের আমেজ, সূক্ষ্ম হিউমার। যেমন ছকভাঙা ন্যারেটিভ, সঙ্গীতের ব্যতিক্রমী ব্যবহার, চিত্রনাট্যের চকিত চমক বা আনায়াস, স্বতঃস্ফূর্ত ফিল্ম অ্যাক্টিং। তাঁকে যেটুকু দেখেছি, পড়েছি, বা মানুষের মুখে শুনেছি, ‘চালচিত্র এখন’ দেখে মনে হয়েছে, মৃণাল সেন নিজে এই ট্রিবিউট খুব উপভোগ করতেন।”
নির্মাতা অমিতাভ রেজা লিখেছেন, “জানি না আমার কেন এত ভাল লাগলো। হয়তো আমার মৃণাল সেন এর জন্য অগাধ ভালোবাসার কারনে, হয়তো মহাজন বা গীতা সেন কে ভালবাসার কারনে কিংবা অঞ্জন দত্তের সিনেমা ভেরিটি স্টাইল অব ফিল্মমেকিং কিংবা নীল দত্তের সুন্দর সংগীত। নস্টালজিক সিনেমা আমার জন্য।”
![](https://150593535.v2.pressablecdn.com/wp-content/uploads/2024/05/anjan-and-mrinal.jpg)
মানস নাথ নামে একজন লিখেছেন,“অঞ্জন দত্ত একজন অসাধারণ অভিনেতা৷ শুধু তাই নয় তিনি আমাদের জেনারেশনেরর একজন অসামান্য এন্টারটেনার৷ আমি ওনার গানের ভক্ত। ওনাকে অনেক ধন্যবাদ মৃণাল সেনকে আলোচনায় ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য৷ সদ্য দেখেছি বলে খুব ইচ্ছা করছে চালচিত্রের সিন বাই সিন আলোচনা করি৷ছবির রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে আড্ডা মারি, গল্পটা বলি৷ কিন্তু সংযম রক্ষা করলাম৷ কারণ আমি চাই আপনারাও সিনেমাটা দেখুন। তারপর কথা হবে।”
প্রযোজক রানা সরকার লিখেছেন, “অঞ্জন দত্তর প্রতিভা নিয়ে কারো কোনোদিন সন্দেহ ছিলনা। কিন্তু ওই যে বলে না ব্যাটে বলে না হলে বিরাট কোহলিও ছয় মারতে পারে না। এবার ব্যাটে বলে হয়েছে এবং অঞ্জন দত্ত এমন এক সিনেমা বানিয়েছেন তাতে আবেগ, স্মৃতি ও নিজেকে উজাড় করে দিয়ে বাংলা সিনেমাকে সমৃদ্ধ করলেন।”
তরুণ ফিল্মমেকার, ফটোগ্রাফার অনিকেম মিত্র ছবিটি দেখে লিখেছেন, “চালচিত্র এখন, আমার দেখা এখনও অবধি সেরা বাংলা বায়োপিক। অনেকদিন পর সেই পুরনো অঞ্জন দত্তকে ফিরে পেলাম। যার প্রমাণ করার আর কিছু নেই। কোনো দায়ভার নেই। নেই পিছুটান। একটা অসম্ভব সৎ, নির্ভেজাল সিনেমা। মৃণাল সেনকে আমি দেখেছি বেশ কয়েকবার নন্দনে। অঞ্জন দত্তের সঙ্গে ওনার শারীরিক কোনো মিল নেই। কিন্তু ছবিটা যখন দেখতে বসলাম, মনে হলো অঞ্জন দত্তের আত্মার সঙ্গে মিশে গিয়েছে মৃণাল সেন।”
https://www.channelionline.com/chalchitra-ekhon-in-blast-now/
2024-05-14 14:57:27