দেশের সর্বাধুনিক সিনে থিয়েটার স্টার সিনেপ্লেক্স সাফল্যের সঙ্গে গত দুই দশক ধরে দেশ-বিদেশের সিনেমা প্রদর্শন করছে। উন্নত পরিবেশে ছবি উপভোগ করতে সিনেপ্রেমীদের ‘ফার্স্ট চয়েজ’ই যেন স্টার সিনেপ্লেক্স! নতুন করে বাড়ছে সিনেপ্লেক্সের পরিধি। তাই ‘তৃতীয় দশকের স্বপ্ন’ শীর্ষ এক সংবাদ সম্মেলনে দেশীয়-ভিনদেশি সিনেমা প্রসঙ্গে সোমবার সন্ধ্যায় নগরীর ঢাকা ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ।
![](https://150593535.v2.pressablecdn.com/wp-content/uploads/2024/02/Channeliadds-googlenews.jpg)
যেখানে উপস্থিত ছিলেন সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান ও সাংসদ (চট্টগ্রাম-১ মিরসরাই) মাহবুব রহমান রুহেল, প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র বিপণন কর্মকর্তা মেজবাহ আহমেদসহ সিনেপ্লেক্স সংশ্লিষ্ট অনেকে। গণমাধ্যমের সামনে সিনেপ্লেক্স চেয়ারম্যান রুহেল তার প্রতিষ্ঠান নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন। আশা প্রকাশ করে বলেন, সারাদেশে সিনেপ্লেক্সের ১০০ ব্রাঞ্চ চালুর পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন এবং বাস্তবায়ন করবেন।
![](https://150593535.v2.pressablecdn.com/wp-content/uploads/2024/02/Channeliadds-bkash-05.05.2024.jpg)
সিনেপ্লেক্স যেমন ছবি প্রদর্শনের সারথি হয়েছে, তেমনি মাঝেমধ্যে এই প্রেক্ষাগৃহ চেইনটির বিরুদ্ধে কোনো কোনো নির্মাতা প্রযোজক অভিযোগ করে বলেন, সিনেপ্লেক্স বাংলা সিনেমা প্রাধান্য দেয় না!
দুদিন চলার পর সস্প্রতি ‘ডেডবডি’ সিনেপ্লেক্স থেকে নামিয়ে ফেলার পর সংশ্লিষ্ট সিনেমার নির্মাতার সমালোচনা সইতে সিনেপ্লেক্সকে৷ এমনকি দু-দিন আগে এফডিসিতে সংবাদ সম্মেলন ডেকে সিনেপ্লেক্সের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করেছেন ‘ডেডবডি’র পরিচাল। যা নিয়েও এদিন সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন রুহেল।
![](https://150593535.v2.pressablecdn.com/wp-content/uploads/2024/02/Channeliadds-Reneta-16-04-2024.gif)
এসব বিষয় সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান রুহেল অসন্তোষ প্রকাশ করে ‘ডেডবডি’ প্রসঙ্গে বলেন, যে অপবাদ দেয়া হচ্ছে এতে সিনেপ্লেক্সের সবাই কষ্ট পেয়েছে। এখানে আমার বা সিনেপ্লেক্সের কোনো হাত নেই। আমি কোনো ব্যক্তি বা ছবির বিপক্ষে নই। ব্যবসা হলে প্রফিট সিনেপ্লেক্সেরও হবে। কিন্তু কোনো ছবি সিনেপ্লেক্সে দর্শক না দেখে সেটা আমাদের দোষ নয়। এটা ছবি সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা। তারা ঠিকমত প্রমোশন করেনি, ভালোমত ছবিটি বানাতে পারেনি। প্রেস কনফারেন্স করে বলা হচ্ছে ‘সিনেপ্লেক্সকে কন্ট্রোল’ করতে হবে। আপনারা কিসের কনট্রোল করবেন? বিনিয়োগ করে রিস্ক নিচ্ছি আমি, আপনারা কেন কনট্রোল করবেন? এখানে গডফাদার আনতে চাচ্ছে কিনা জানি না।
মাহবুব রহমান রুহেল বলেন, কথাগুলো বাধ্য হয়ে বলছি, সিনেপ্লেক্সে যারা ছবি দেখে তারা এসব ছবি (ডেডবডি) দেখতে চায় না। আমাদের সার্ভে অনুযায়ী ১৯৯৭ সালের দিকে জন্ম সেই জেনারেশন বেশি ছবি দেখতে আসে। তারা ভালো গল্পের আধুনিক ছবি চায়। কিন্তু এসব না করে যা ইচ্ছে ও মানহীন ছবি দিয়ে জোর করে বলা হয় সিনেপ্লেক্সে দেখাতে হবে এটা তো হবে না। ‘ডেডবডি’ চালানোর জন্য উনি (ইকবাল) আমাকে বারবার বলেছেন। ভেবেছি, এতবার যেহেতু বলছে দিয়ে দেখি কি হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এ ছবি দর্শক দেখেই নাই, বরং নেগেটিভ প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। আমাদের দর্শকরা বলেছে, সিনেপ্লেক্সে এই টাইপের ছবি দেখতে চাই না। শিক্ষিত, আপারক্লাস এবং মধ্যবিত্তরা আমাদের নিয়মিত দর্শক। তারাই আমাদের কাছে কিং। এমন কোনো ছবি আমরা দেখাবো না যে আমাদের ব্র্যান্ড ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মানহীন ছবি নির্মাণের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঝেড়ে মাহবুব রহমান রুহেল বলেন, যে যা ইচ্ছে ছবি বানাবে তাই আমাকে দেখাতে হবে এটা তো হতে পারে না। সিনেপ্লেক্স একটি শপ এবং ছবি হচ্ছে প্রডাক্ট। শপের মানুষের চাহিদা মতো প্রডাক্ট না দিলে পারলে সেগুলো রাখবো কেন? এসব নিয়ে আমাকে কেউ কখনো বাধ্য করতে পারবে না। দরকার হলে আমি এই ব্যবসাই করবো না। আসলে সিনেপ্লেক্স ব্র্যান্ড হয়েছে দর্শকের আস্থার কারণে। মানুষ জানে সিনেপ্লেক্সে ছবি দেখলে বিরক্ত হবে না, বরং আনন্দময় সময় কাটাতে পারবে। এই বিশ্বাস আমাকে বজায় রাখতে হবে।
”দর্শক বিশ্বাস করে এসে যে ছবি দেখে বিরক্ত হচ্ছে এবং ব্যবসায়িকভাবে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, স্ক্রিনিং কস্ট উঠছে না সেই ছবি তো আমি চালাবো না। কেউ যদি জোর গলায় খাওয়ানোর চেষ্টা করে তার ছবি বেস্ট সেখানে আমার কিছু বলার নেই। দর্শক যেটা বলবে আমরা সেদিকে বিশ্বাসী। এসব নিয়ে যে যতই প্রেস কনফারেন্স করুক আমার অবস্থান অনড় থাকবে। আমি সবসময় ভালো বাংলা ছবির পক্ষে। আমাদের ইয়াং মেধাবী পরিচালকরা দর্শকদের চাহিদা বুঝে কিছু কিছু ভালো সিনেমা উপহার দিয়েছেন। যেমন হাওয়া, পরাণ, প্রিয়তমা, সুড়ঙ্গ, রাজকুমার।”
এদিকে, ৩ মে বদরুল আনাম সৌদ পরিচালিত ‘শ্যামা কাব্য’ নামে আরেক ছবি মুক্তি পায়। মুক্তির দিনেই নির্মাতা অভিযোগ করেন, সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা সিটি ব্রাঞ্চে ৩ নং হলে যে স্ক্রিনে তার ছবি দেখাচ্ছে, সেখানে ছবি দেখে দর্শক বিভ্রান্ত হচ্ছেন। স্ক্রিন ঘোলাসহ নানা ধরনের সমস্যা রয়েছে। এ কারণে তিনি সিনেপ্লেক্স থেকে ছবি নামিয়ে নেন। এই অভিযোগটির প্রসঙ্গে উত্তর দিয়েছেন রুহেল।
‘ন ডরাই’ ছবির এই প্রযোজক বলেছেন, বসুন্ধরাতে পাঁচটি স্ক্রিন রয়েছে। রিসেন্ট ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এ কারণে যে স্ক্রিনে সমস্যা আছে, সেটা ঠিক করা সম্ভব হয়নি। অপেক্ষা করছি, নতুন চুক্তি হওয়ার পর স্ক্রিনসহ বাকি যা আছে সেগুলো ঠিক করবো। উনি (বদরুল আনাম সৌদ) ঠিক বলেছেন। ওই হলে আমাদের প্রজেকশনে একটু সমস্যা ছিল। ওনার ছবিটি যেহেতু ডার্ক, উনি স্ক্রিন চেইঞ্জ করতে আমাকে পার্সোনালি বলতে পারতেন। আমি রিপ্লেস করে দিতে পারতাম। কিন্তু তারা সিনেপ্লেক্সের লবিতে দাঁড়িয়ে আমাদের অপবাদ দিয়েছে, যা কাম্য নয়। তবে আমি পরিসংখ্যান দেখলাম তার ছবি দেখতে দর্শক কম এসেছিল। ছবি ভালো মন্দ তা বলবো না তবে দর্শক সেভাবে ছিল না। ভালো সিনেমা বলতে দর্শক ঈদের পর এখনো সিনেপ্লেক্সে ‘রাজকুমার’ চলছে এবং দর্শক পছন্দ করায় আমরা চালাচ্ছি। দর্শক কম থাকায় নামিয়ে দেয়ার পর আবার দর্শকরা চাচ্ছে বলে ‘কাজলরেখা’ দেখাচ্ছি। আমি সাপ্লাই ডিম্যান্ডে বিশ্বাস করি। দর্শক যেটা চাইবে আমি সেটা দেখাবো। এতে ব্লেম করলে মানবো না।
https://www.channelionline.com/star-cineplex-chairman-mahboob-rahman-ruhel-interview/
2024-05-15 00:55:36